ঢাকা ০৪:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক :পাবনায় ছাত্রলীগের ৭ নেতা-কর্মী বহিষ্কার

পাবনা প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩ ৩২৪ বার পঠিত

জামায়াতে ইসলামী নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় পাবনায় ছাত্রলীগের ৭ নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার
করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি
মিজানুর রহমান সবুজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি
মিজানুর রহমান সবুজ ও সাধারণ রাব্বিউল ইসলাম সিমান্ত স্বাক্ষরিত প্রেস
বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। একই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে
চূড়ান্তভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী
সংসদে সুপারিশ করা হয়েছে।
সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন,পাবনা সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ
সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি,গয়েশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক ইমন খান,চাটমোহরের ফৈলজানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা
সম্পাদক মামুন হোসেন,আতাইকুলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিক
খান,ভুলবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি সাদ্দাম
হোসেন,চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবুল হাসান, বেড়া উপজেলা
ছাত্রলীগের কর্মী আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স।
এদিকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য শোক প্রকাশ করা নিয়ে সমালোচনা ও
দলীয় চাপের মুখে পড়ে গত বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ রকি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ
করেছেন।
তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন,প্রিয় ভাঁড়ারা ইউনিয়নবাসী। আমি
মুসলমান হয়ে একজন মুসলমান মারা যাওয়াতে যদি ইন্না-লিল্লাহি বলতে না
পারি,ওই সংগঠন আমার দরকার নেই। আমি নিজ ইচ্ছায় আজ থেকে ভাঁড়ারা
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
যোগাযোগ করা হলে সদ্য বহিষ্কৃত রাকিবুল হাসান শেখ রকি বলেন,‘আল্লামা
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পরে শোক জানিয়ে তাৎক্ষণিক ফেসবুকে
পোস্ট দেই। শুধু তাই নয়,আমরা যে চারজন একসঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি
ওরাও সাঈদী সাহেবের জন্য শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়। এসব পোস্ট নিয়ে আপত্তিকর
অবস্থা দেখা দিলে ওদের তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর নেতা–-কর্মী বলতে লাগল
আমাকেও নাকি বহিষ্কার করা হবে। চিন্তা করলাম বহিষ্কার করলে কেমন হয়,এর
আগে নিজে থেকে পদত্যাগ করি। এ জন্য আমি ভেবে চিন্তে বহিষ্কারের ২১ ঘণ্টা
আগে পদত্যাগ করেছি।’
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন,
‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি একজন
সত্যিকারের যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। তাঁকে নিয়ে কিছু ছাত্রলীগের নামধারী
নেতাকর্মী শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়। এতে তাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের নিজ হাতে গড়া ছাত্রলীগ এমন নীতি আদর্শহীন কাজ কোনোভাবেই
করতে পারে না। মূলত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শেই তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা
হয়েছে। একই সময়ে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে অবগত
করা হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত এলে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হবে। এ
জেলায় আরও কোনো নেতা–কর্মী যদি পোস্ট দিয়ে থাকে তাহলে আমাদের নলেজে
আসলে এমন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য,গত সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
মারা যান দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।

ট্যাগস :

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক :পাবনায় ছাত্রলীগের ৭ নেতা-কর্মী বহিষ্কার

আপডেট সময় : ০৪:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩

জামায়াতে ইসলামী নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় পাবনায় ছাত্রলীগের ৭ নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার
করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি
মিজানুর রহমান সবুজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি
মিজানুর রহমান সবুজ ও সাধারণ রাব্বিউল ইসলাম সিমান্ত স্বাক্ষরিত প্রেস
বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। একই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে
চূড়ান্তভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী
সংসদে সুপারিশ করা হয়েছে।
সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন,পাবনা সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ
সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি,গয়েশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক ইমন খান,চাটমোহরের ফৈলজানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা
সম্পাদক মামুন হোসেন,আতাইকুলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিক
খান,ভুলবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি সাদ্দাম
হোসেন,চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবুল হাসান, বেড়া উপজেলা
ছাত্রলীগের কর্মী আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স।
এদিকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য শোক প্রকাশ করা নিয়ে সমালোচনা ও
দলীয় চাপের মুখে পড়ে গত বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ রকি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ
করেছেন।
তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন,প্রিয় ভাঁড়ারা ইউনিয়নবাসী। আমি
মুসলমান হয়ে একজন মুসলমান মারা যাওয়াতে যদি ইন্না-লিল্লাহি বলতে না
পারি,ওই সংগঠন আমার দরকার নেই। আমি নিজ ইচ্ছায় আজ থেকে ভাঁড়ারা
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
যোগাযোগ করা হলে সদ্য বহিষ্কৃত রাকিবুল হাসান শেখ রকি বলেন,‘আল্লামা
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পরে শোক জানিয়ে তাৎক্ষণিক ফেসবুকে
পোস্ট দেই। শুধু তাই নয়,আমরা যে চারজন একসঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি
ওরাও সাঈদী সাহেবের জন্য শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়। এসব পোস্ট নিয়ে আপত্তিকর
অবস্থা দেখা দিলে ওদের তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর নেতা–-কর্মী বলতে লাগল
আমাকেও নাকি বহিষ্কার করা হবে। চিন্তা করলাম বহিষ্কার করলে কেমন হয়,এর
আগে নিজে থেকে পদত্যাগ করি। এ জন্য আমি ভেবে চিন্তে বহিষ্কারের ২১ ঘণ্টা
আগে পদত্যাগ করেছি।’
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন,
‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি একজন
সত্যিকারের যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। তাঁকে নিয়ে কিছু ছাত্রলীগের নামধারী
নেতাকর্মী শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়। এতে তাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের নিজ হাতে গড়া ছাত্রলীগ এমন নীতি আদর্শহীন কাজ কোনোভাবেই
করতে পারে না। মূলত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শেই তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা
হয়েছে। একই সময়ে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে অবগত
করা হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত এলে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হবে। এ
জেলায় আরও কোনো নেতা–কর্মী যদি পোস্ট দিয়ে থাকে তাহলে আমাদের নলেজে
আসলে এমন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য,গত সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
মারা যান দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।